আগামী সংসদ নির্বাচন বিদ্যমান পদ্ধতিতে করার প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) কারণ পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি সংবিধানে নেই। এ পদ্ধতি আরওপিতে (গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ) নেই। যে পদ্ধতি আছে সেখানে সে পদ্ধতিতে পিআর আরপিওতে নেই। এ কারণে সংসদ বর্তমান আইনে করতে চায় সংবিধানিক প্রতষ্ঠানটি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আরপিওটা পরিবর্তন করে যদি এটা অন্য একটা দিয়ে দেওয়া হয় তাহলে আইন বদলাতে হবে। আমরা তো আইন বদলাতে পারি না। যদি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হয় তবে ফেব্রুয়ারিতে ভোট করা সম্ভব কি? এমন প্রশ্নে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, সেটা তো আইন বদলাইতে হবে, আরপিও বদলাতে হবে। আর এখানে আরপিওতে যে সিস্টেম আছে সেটা বদলাতে হলে সংবিধানও বদলাতে হবে। আবার সংবিধান বদলাতে বলা হলে আমার বিরুদ্ধে কথাবার্তা বলবে উনি তো পিআরের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। এ এম নাসির উদ্দিন বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো একটা ফয়সালা বা মীমাংসায় আসুক। উনারা তো বুঝবেন যে আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে কি হবে না। যদি উনারা পিআর চান তাহলে উনারা বুঝবেন না।
লাঙ্গল প্রতীকের মালিক খুঁজে পাচ্ছেন না সিইসি:
জাতীয় পার্টির (জাপা) লাঙ্গল পেতে একাধিক আবেদন পড়েছে। এ প্রতীক কাকে দেওয়া হবে তার কোনো মালিক খুঁজে পাচ্ছেন না প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। জাতীয় পার্টি সংলাপে আসতে পারবে কি না? এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, জাতীয় পার্টির পাঁচটা প্রস্তাব পেয়েছি। আপনারা কয়টি পেয়েছেন জানি না কোন জাতীয় পার্টির কথা বলছেন বুঝতে পারছি না। লাঙ্গলের দাবিদার তো একাধিক।
শাপলা প্রতীক নিয়ে এখন আলোচনা কেন, প্রশ্ন সিইসির
সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, প্রথম নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না শাপলা প্রতীক চেয়েছিলেন, তখন আলোচনা করেনি এখন শাপলা নিয়ে আলোচনা কেন? কমিশনের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, নানা কারণে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা (এনসিপি) চিঠি দিতে পারেন এতে সমস্যা নেই। তারা রাজনীতিবিদ হিসেবে বলতে পারেন। এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, দেশের মানুষের আস্থা অর্জন করেছি, তবে কানাডা সফরে গিয়ে দেখলাম আমাদের প্রবাসীদের জানার অনেক গ্যাপ আছে, যা টের পাইনি। প্রবাসীদের দেখলাম আমাদের ওপর অনাস্থা ভাব।
প্রবাসীদের ভোট দিতে এনআইডি বাধ্যতামূলক নয়:
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট দিতে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বাধ্যতামূলক নয়। ভোটার তালিকায় নাম থাকলেই তারা ভোট দিতে পারবেন। গত বুধবার লন্ডনে প্রবাসীদের সঙ্গে অনলাইন মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার (ইসি) অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। মিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অনুষ্ঠানের আয়োজন করে লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশন। সঞ্চালনা করেন হাই কমিশনার আবিদা ইসলাম। কমিশনার সানাউল্লাহ বলেন, ‘২০০৮ সাল থেকে ছবিসহ ভোটার তালিকা চালু রয়েছে। যারা তালিকায় নাম নিবন্ধন এরপর করেছেন, তারা ভোট দিতে পারবেন এবং তাদের আলাদা এনআইডি থাকার প্রয়োজন নেই।’
তিনি জানান, প্রবাসীরা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন। এজন্য নির্বাচন কমিশন একটি বিশেষ অ্যাপ তৈরি করছে, যা নভেম্বর ২০২৫ থেকে চালু হবে। ভোট প্রক্রিয়া হবে দুই ধাপে, নিবন্ধন (এনরোলমেন্ট প্রসেস) ও ভোটদান (ভোটিং প্রসেস)। প্রবাসীদের ভোটার তালিকায় নাম রেজিস্ট্রেশনের জন্য জন্মনিবন্ধন অথবা পিতা-মাতার এনআইডি লাগবে। পিতা-মাতা মৃত হলে মৃত্যু সনদ দিয়েও নিবন্ধন করা যাবে।