তীব্র হাড়কাঁপানো শীতে কাঁপছে আলমডাঙ্গা উপজেলা। গত কয়েকদিন ধরে এ অঞ্চলে বয়ে চলা শীতের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ ও ছিন্নমূল পরিবারগুলো। আলমডাঙ্গার ফুটপাতে বাঁশ ও পলিথিন দিয়ে তৈরি অস্থায়ী কয়েকটি কাপড়ের দোকানে মানুষের ভিড় জমে ওঠেছে। তীব্র শীত থেকে বাঁচতে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষগুলো ছুটছেন এসব পুরনো ও সস্তা কাপড়ের দোকানে। সাশ্রয়ী মূল্যে জ্যাকেট, সোয়েটার, কোট কিংবা মাফলারের খোঁজে ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন। শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে এসব সেকেন্ড হ্যান্ড বা পুরনো কাপড়ের চাহিদা বহুগুণ বেড়ে গেছে।
আলমডাঙ্গার রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড ও প্রধান সড়কের মোড়গুলোতে দেখা গেছে মানুষের হাহাকার। সারাদিন হাড়কাঁপানো বাতাসের কারণে কাজে বের হতে পারছেন না দিনমজুরেরা। খড়কুটো জ্বালিয়ে অনেককে রাস্তার ধারে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা যাচ্ছে। তীব্র ঠান্ডার কারণে শিশু ও বৃদ্ধদের নিউমোনিয়া ঠাণ্ডা-কাশিসহ শীতকালীন নানা রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সামর্থ্যের অভাবে অনেকের পক্ষেই নতুন গরম কাপড় কেনা অসম্ভব। ফলে ফুটপাতের এই জীর্ণ দোকানগুলোই তাদের শেষ ভরসা।
স্থানীয় প্রশাসন, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন কিছু কম্বল বিতরণ করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য। আলমডাঙ্গার গ্রামাঞ্চলে এখনো হাজারো মানুষ একটি গরম কাপড়ের অভাবে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। বাজারে আলমডাঙ্গায় পুরানো কাপড় কিনতে আসা একজন ক্রেতার আক্ষেপ করে বলেন, ‘শীত তো আসলো, কিন্তু আমাদের মতো গরীবের জন্য এই শীত কষ্টের পাহাড়। ফুটপাত থেকে একটা সস্তা সোয়েটার কিনতে পারলেই এবার রক্ষা।’
চলমান শৈত্যপ্রবাহ চলতে থাকলে এই দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলে মনে করেন মানিবাধিকার কর্মী আল আমিন হোসেন। তিনি আলমডাঙ্গার বিত্তবান মানুষ ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন । এই কনকনে ঠান্ডায় একটি পুরোনো কাপড় বা একটি কম্বল হতে পারে একজন শীতার্ত মানুষের কাছে অমূল্য উপহার।