সাউতুল কুরআন ফাউন্ডেশন চুয়াডাঙ্গা জেলা কর্তৃক ৩য় বার্ষিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা-২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত সোমবার সকাল থেকে দিনভর দামুড়হুদার চন্দ্রবাস দারুল উলুম হাফিজিয়া ক্বওমী মাদ্রাসায় এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ৫ পারা, ১০ পারা, ২০ পারা ও ৩০ পারা কেরাত প্রতিযোগিতা, আজান ও ইসলামী সংগীত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় জেলার ৪২টি মাদ্রাসা অংশগ্রহণ করে।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কওমী মাদ্রাসা পরিষদ চুয়াডাঙ্গার সভাপতি শায়খুল হাদিস আব্দুর রাজ্জাক সাহেব, পাঁচকমলাপুরের হাজী শামসুজ্জোহা জামি’আ আরাবিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসার মুহতামিম শায়খুল হাদিস আব্দুল কাদের সাহেব, চুয়াডাঙ্গা জেলা উলামা পরিষদের সেক্রেটারি মুফতি মুস্তাফা কামাল কাসেমী, দর্শনা উলামা পরিষদের সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল মালেক ও চন্দ্রবাস দারুল উলুম হাফিজিয়া ক্বওমী মাদ্রাসার সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক সাহেব।
প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দারুণ সাফল্য অর্জন করেছে আলমডাঙ্গার পাঁচকমলাপুরের হাজী শামসুজ্জোহা জামি’আ আরাবিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে এ মাদ্রাসার ২৩ জন শিক্ষার্থী পুরস্কার লাভ করেছে। হাজী শামসুজ্জোহা জামি’আ আরাবিয়া দারুল উমুল মাদ্রাসা থেকে ৫ পারা গ্রুপ থেকে প্রথম স্থান অধিকার করেন জুনাইদ আহমেদ এবং নবম স্থান অধিকার করেন সাইদুর রহমান। ১০ পারা গ্রুপ থেকে চতুর্থ স্থান অধিকার করেন আরাফাত, পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছেন মিরাজুল ও নাহিদ।
২০ পারা গ্রুপে ৫ম স্থান অধিকার করেছে নোমান আলী, ৭ম হুসাইন আহাম্মেদ, ৮ম জুনাইদ, ৯ম তাওফিক ওমর, ১০ম তাওহিদ, ১৩তম রাইহান ও ১৪তম আ. মাজিদ। ৩০ পারা গ্রুপে ২য় স্থান অধিকার করেন রাতুল হাসান, ৩য় মিনারুল ইসলাম, ৪র্থ তামজিদুল হক, ৫ম আকমান আলী, ৬ষ্ঠ ইমন আলী, ৭ম জাব্বারুল ইসলাম, ৮ম আব্দুল মোমিন, ১০ম আ.হাই, ১১তম আব্দুল্লাহ, ১২তম শামীম রেজা, ১৩তম হুজাইফা ও ১৪তম আবু সাদিক।
এছাড়া কেরাত প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন তামজীদুল ইসলাম। আজান প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন আব্দুল মোমিন এবং তৃতীয় স্থান অধিকার করেন আব্দুর রহমান। ইসলামী সংগীত প্রতিযোগীতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন মিহসান উদ্দিন।
এদিকে, হাজী শামসুজ্জোহা জামি’আ আরাবিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের এই সাফল্যে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মাদ্রাসার পরিচালক বাংলাদেশ বিজনেস চেম্বার অব সিঙ্গাপুরের (বিডিচ্যাম্প) প্রেসিডেন্ট, সাহিদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চুয়াডাঙ্গা কৃতী সন্তান আলহাজ্ব সাহিদুজ্জামান টরিক।
উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গার কৃতী সন্তান আলহাজ্ব সাহিদুজ্জামান টরিক, এক সময়ের সাংবাদিক ও বর্তমান বিশিষ্ট প্রবাসী ব্যবসায়ী আরিফুজ্জামান আরিফ এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক সময়ের সমীকরণের প্রকাশক-সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফের পিতা মরহুম শামসুজ্জোহা বিশ্বাস একটি সুন্দর দ্বীনি শিক্ষার ভাবনা নিয়ে ২০০১ সালে মাত্র ১৩ জন ছাত্র ও একজন শিক্ষক নিয়ে একটি চালাঘরে আলমডাঙ্গা উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়নের পাঁচকমলাপুর গ্রামে ‘পাঁচকমলাপুর দারুল উলুম কওমিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা’ নামে দ্বীনি শিক্ষার এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১০ সালে হাজি শামসুজ্জোহা বিশ্বাসের মৃত্যুর পর এই মাদ্রাসাটির পরিচালকের দায়িত্ব নেন তাঁর পুত্র চুয়াডাঙ্গার কৃতী সন্তান ও দানবীর হিসেবে খ্যাত আলহাজ্ব সাহিদুজ্জামান টরিক। একজন সুযোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে পিতার সুস্বপ্নকে আন্তরিকতা, ভালোবাসা, মেধা ও শ্রম দিয়ে নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। মাদ্রাসাটি পরিচালনার জন্য সাহিদুজ্জামান টরিক চুয়াডাঙ্গায় তিন তারকা মানের হোটেল সাহিদ প্যালেস অ্যান্ড কনভেনশন সেন্টার নির্মাণ করেছেন। সেখানে থেকে আয়কৃত সম্পূর্ণ অর্থ এ মাদরাসা কার্যক্রমে ব্যয় করা হয়। ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে মাদ্রাসাটিতে ছাত্রদের জন্য লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। যেখানে তিন বেলা মাদ্রাসার সকল ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক